ফেক নিউজ

ফেক নিউজ

December 26, 2020, 7:24 pm

Updated: December 26, 2020, 7:24 pm

করোনাভাইরাস কি কোন জৈব অস্ত্র? এর বিরুদ্ধে কি ভ্যাকসিন কার্যকর?

Author: BD FactCheck Published: December 26, 2020, 7:24 pm | Updated: December 26, 2020, 7:24 pm

ইউটিউবে একটি দীর্ঘ ভিডিও থেকে কোভিড-১৯ নিয়ে বেশ কিছু অপ্রমাণিত ও অসত্য দাবি করা হচ্ছে যার মধ্যে রয়েছে এটি এইচআইভি এর জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল নিয়ে মনুষ্য তৈরী একটি জৈব অস্ত্র এবং কোন ভ্যাকসিন এর বিরুদ্ধে কার্যকর হবেনা এরকম দাবিও।

৪৮ মিনিটের ভিডিওটিতে এমন আরো অনেক দাবি করা হয়েছে যা ফ্যাক্ট চেক করা সম্ভব নয়। দেখুন এখানে

ভিডিওটিতে কয়েক ধাপে বক্তা বলেছেন যে, করোনাভাইরাস আসলে একটি জৈব অস্ত্র হিসেবে আবিষ্কার হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে সার্স কোভ-২ নামক ভাইরাসটি ২০১৯ সালের শেষের দিকে চীনের উহানে বাদুড় থেকে ছড়ায় বলে ধারনা করা হয়। চীনা বিজ্ঞানীরা এর উৎপত্তি নিয়ে এখনো গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত নভেম্বরের রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনা বিজ্ঞানীদের পাওয়া তথ্যের উপর দীর্ঘমেয়াদে গবেষণার জন্য একটি টিম প্রস্তুত তৈরী করেছে।

অধিকাংশ ভাইরাস ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞের মতে ভাইরাসটি প্রাকৃতিকভাবেই উদ্ভুত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের বিবৃতি মতে, করোনাভাইরাস যে মানুষের তৈরী নয় এবং জেনেটিকভাবে সৃষ্ট নয় এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীদের মধ্যে ঐক্যমত্য রয়েছে।

ইউটিউব ভিডিওটির এক অংশে উপস্থাপক বক্তাকে প্রশ্ন করেন, ”আমি জানতে চাই, আপনি যেমন বললেন, ভ্যাকসিন যেমনই হোক তা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে না কারণ এটি সেরকম কোন ভাইরাসই নয়। আসলেই কি ব্যাপারটা এরকম?”

তখন বক্তা বলেন, ”না, এটি জৈব যুদ্ধাবস্থা। এটি খুবই ভয়ংকর জৈব মারণাস্ত্র, ফলে এর বিরুদ্ধে কোন ভ্যাকসিন কাজ করবে না।”

কোন রোগের ভ্যাকসিন সাধারণত: রোগের প্রতিকার করেনা, বরং সেই রোগের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয় ও প্রতিরোধ করে।

ফাইজার ও বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের গবেষণায় দেখা গেছে যে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ভ্যাকসিনটি প্রায় ৯৫ ভাগ সফল। যুক্তরাজ্যে একমাত্র ভ্যাকসিন হিসেবে তা ইতোমধ্যে প্রয়োগের অনুমোদনও পেয়েছে।

বৃটেনে ধরা পড়া করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন ধারার বিপরীতেও এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ভিডিওটির এক পর্যায়ে বক্তা বলেন, ”তারা এখনো কি ঘটেছে, কোথা থেকে এটি এসেছে এবং ভাইরাসটিতে কি আছে সে ব্যাপারে অসত্য বলছে। আমরা আসলে কিছুই জানিনা।”
২০২০ সালের ৭ জানুয়ারী চীনা কর্তৃপক্ষ প্রথম ভাইরাসটি সনাক্ত করে এবং পরবর্তীতে চীন অন্যান্য দেশকে ভাইরাসটির জেনেটিক কোডের ব্যাপারে জানায়।

ভিডিওটিতে বক্তা আরো বলেন যে, উহান ল্যাবের একজন অস্ট্রেলিয়া গিয়ে অস্ট্রেলিয়া হেলথ বোর্ডের সাথে মিলে এইচআইভি ভাইরাসের জেনেটিক কোড থেকে করোনাভাইরাস তৈরী করেছেন।

এইচআইভির সাথে কোভিড-১৯ এর জেনেটিক সাদৃশ্যের কথা গত ফেব্রুয়ারী থেকেই দাবি করা হচ্ছে। যদিও তখনি উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞের পক্ষ থেকে এই দাবিটি খন্ডন করা হয়েছিল।

ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝিতে এক গবেষণায় দেখা যায় করোনার জিনোমে এইচআইভির কোন অবদান নেই।

বক্তা আরো দাবি করেন, ”ফাইজার ও মডার্ণার ভ্যাকসিন নতুন বায়োটেকনোলজি দিয়ে তৈরী যার মাধ্যমে মানুষের শরীরে মেসেঞ্জার আরএনএ প্রবেশ করানো হয়। এটি খু্বই শক্তিশালি প্রযুক্তি যা আপনার জেনেটিক গঠন বদলে দিতে পারে। এর আগে এটা কখনো ব্যবহৃত হয়নি। ব্যাপারটি ঠিক আপনার শরীরে ভিতরে একটি বোমা পুতে রাখার মতো। আমরা জানিনা কি হতে যাচ্ছে।”

অবশ্য রয়টার্সসহ অন্যান্য মাধ্যম এই দাবির অসত্যতা ইতোমধ্যেই নিরূপন করেছে।

রয়টার্স অবলম্বনে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *