
কিভাবে প্রবীণদের ফেইক নিউজ ও প্রোপাগান্ডা চিনতে সাহায্য করবেন
Author: BD FactCheck Published: November 28, 2020, 5:05 pm | Updated: November 29, 2020, 3:55 pm
প্রিয় স্যাভি সিনিয়র
আপনার কাছে কি এমন কোনো উপায় আছে যা বয়স্কদের ফেক নিউজ চিনতে সাহায্য করবে? আমার ৭৫ বছর বয়সী মা পরিবার ও বন্ধুদের সাথে প্রচুর পরিমান ভুল তথ্য শেয়ার করে থাকেন যা তিনি ফেসবুকে পেয়েছেন। আমি তার সাথে এটা নিয়ে আলাপ করেছি, কিন্তু কিছু কারণে তার জন্য সঠিক সংবাদ আর ভুল সংবাদ বা প্রোপাগান্ডার মধ্যে তফাৎ করা কঠিন।
ইতি
এক হতাশ কন্যা
স্যাভি সিনিয়রের উত্তর
প্রিয় মেয়ে,
দুর্ভাগ্যজনকভাবে , তোমার মা যে ডিজিটাল মিসইনফরমেশন সমস্যার মুখামুখি হচ্ছে তা নতুন নয়। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি এবং নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির গবেষনায় দেখা গেছে যাদের বয়স ৬৫ বছরের অধিক তারা কম বয়সীদের তুলনায় ৭ গুন বেশি ভুল তথ্য এবং বিভ্রান্তিকর লিংক শেয়ার করে থাকে।
কিন্তু কেনো?
এখানে অনেক তত্ত্ব আছে। অধিকাংশ বয়স্করাই ফেসবুকের মত সামাজিক মাধ্যমে যুক্ত হয়েছেন গত পাচ থেকে ছয় বছরে। ফলে তাদের ডিজিটাল লিটারেসি অর্থাৎ ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য জানা বোঝায় ঘাটতি রয়ে গেছে।
অন্য তত্ত্ব মতে বেশিরভাগ বয়স্কদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এক সময় চিন্তাভাবনার নিন্মগতি দেখা দেয়। যা তাদের গুজবে বিশ্বাসের দিকে নিয়ে যায়। অনেক প্রবীণ আমেরিকানরাই প্রচন্ড একাকিত্বে ভুগে থাকেন যা তাদের ভুল তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে একটি প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখে। কারন এর দ্বারা অন্যদের সাথে তাদের যোগাযোগ তৈরী হয় এবং গবেষনায় দেখা গেছে, বয়স্করা তরুণদের থেকে বেশি বিশ্বাসযোগ্য ফলে অতি সরলতা তাদের ধোঁকার মুখে ফেলে দেয়।
বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারী আর মার্কিন নির্বাচনের মাঝে দাঁড়িয়ে এটি আরো উদ্বেগের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুটোই ভুল তথ্য, গুজব এবং নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্বে পরিপূর্ন। আর প্রবীণরা এই মিথ্যা/ ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছে কারন তারা তরুণদের তুলনায় ভোট প্রদানের প্রতি বেশি আগ্রহী এবং কোভিড-১৯ এর ফলে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বা মৃত্যুর সম্ভবনাও অত্যাধিক।
তাহলে উপায় কি?
অনলাইনে ভুয়া তথ্য় মোকাবিলা করতে আপনার মায়ের জন্য বেশ কিছু উপকরণ আছে যেখানে বিনামূল্যে কোর্স করানো হয় এবং পরামর্শ দেয়া হয়।
একটা হলো মিডিয়াওয়াইজ ফর সিনিয়রস, এটা মূলত পয়েন্টার ইন্সটিটিউটের একটি প্রজেক্ট, যেখানে প্রবীণদেরকে ভুয়া তথ্য ও গুজব চিহ্নিত করতে এবং এর বিরুদ্ধে লড়াইয়েরর কৌশল সম্পর্কে বিনামূল্যে শেখানো হয়।
প্রথম চার সপ্তাহের কোর্সটির জন্য নিবন্ধন ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তোমার মা চাইলে আরেকটি কোর্স শুরু করতে পারেন যার নাম “Hands-On Lessons to Separate Fact and Fiction Online.”। ক্রিস্টিয়ানো আমানপৌর এবং জন লুন্ডন পরিচালিত এই কোর্সটি শুরু হবে ২৪ সেপ্টেম্বর কিন্তু তোমার মা চাইলে যে কোনো সময়ে এই কোর্সটি শুরু করতে পারবেন।
একইসাথে পয়েন্টার AARP এর সাথে মিলে ফ্যাক্ট ট্র্যাকিং ভিডিও এবং ভুল তথ্য চিহ্নিত ও যাচাইয়ের উদ্দেশ্য ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে।
এরকম আরো কিছু ফ্রি কোর্সে তুমি দেখতে পারো। যেমন সিনিয়র প্লানেট এক্ষেত্রে কার্যকারি, যারা প্রবীণদের জন্য “কিভাবে ফেক নিউজ চিহ্নিত করবেন” শিরোনামে ঘন্টা-ব্যাপি কোর্স চালু করেছে।
এক্ষেত্রে the Checkology virtual classroom এর নিউজ লিটারেসি প্রজেক্ট তোমার জন্য একটা ভালো উপায় হতে পারে। এটা মূলত মাধ্যমিক এবং মিডল স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য তবে এখন বয়স্কদের জন্যেও স্বতন্ত্রভাবে শিক্ষার একটি অপশন রয়েছে। তাদের কোর্সের মাধ্যমে তোমার মা সংবাদ, মতামত এবং প্রোপাগান্ডা সম্পর্ক একটা ভালো ধারনা পেতে পারেন।
এছাড়া আছে কোর্সেরা যেটি ছয় সপ্তাহ ব্যাপি “Making Sense of the News: News Literacy Lessons for Digital Citizens,” শিরোনামে একটি কোর্স শুরু করছে। এটিও তোমার মায়ের জন্য উপকারী হতে পারে।
এর বাইরে আরও অনেক চমৎকার ওয়েবসাইট আছে যেমন- PolitiFact.com, Snopes.com এবং FactCheck.org, এসব সাইটের ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিবেদনের মাধ্যমে তোমার মা ফ্যাক্ট বনাম ফিকশন সম্পর্কে ভালো ধারনা পাবে আশা করি। ভাইরাল হয়েছে এমন সব খবরের সত্যা-মিথ্য যাচাই করে থাকে এসব সাইট।
(স্যাভি সিনিয়র একটি ওয়েবসাইট যেখানে মানুষজন বিভিন্ন মিডিয়া এবং ইনফরমেশন সংক্রান্ত প্রশ্ন করতে পারে।)
Goldendalesentinel.com থেকে অনূদিত