
ফাইজারের ভ্যাকসিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করবে মর্মে ভিত্তিহীন প্রচারণা
Author: BD FactCheck Published: December 10, 2020, 12:20 pm | Updated: December 10, 2020, 11:18 pm
সামাজিক মাধ্যমে বেশ কিছু পোস্টে দাবী করা হচ্ছে , ফাইজার এবং বায়োএনটেক এর ভ্যাকসিন সম্পর্কে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, এই ভ্যাকসিন জনসংখ্যা কমিয়ে দেবে । দাবিটি অসত্য।
গত ডিসেম্বরের ১ তারিখ প্রথম দেশ হিসাবে যুক্তরাজ্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে। অসত্য খবরটি এর পরেই বেশি করে ছড়িয়েছে।
প্রচারিত পোস্টগুলোতে দেখা গেছে, ইউকে সরকারের তরফ থেকে একটি দলিল পাঠিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের এই ভ্যাকসিন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে । প্রচারণার কেন্দ্রে আছে এই দলিলটি।

বিশেষ করে , সেখানে “Fertility, pregnancy and lactation” সেকশন যুক্ত করে নির্দেশনায় , গর্ভাবস্থায় এবং দুগ্ধপোষ্য সন্তান আছে এমন ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন না নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে ।
এর প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমের পোস্টগুলোতে ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, ‘আমরা এতদিন জন্মনিরোধ ভ্যাকসিনের কথা শুনেছি, এই যে দেখুন প্রমাণ। কর্তৃপক্ষ এটাই বলছে ।’
যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই দলিলটি প্রচারিত হয়েছে এটা সত্যি। কিন্তু এর কোথাও বলা হয়নি ভ্যাকসিনটি জনসংখ্যারোধ করবে ৷
এখানে কেবল বলা হয়েছে, গর্ভাবস্থায় আছেন এবং দুধপান করাচ্ছেন এমন মায়েদের এই টিকা নেয়া উচিত হবে না কারণ এখনো সে বিষয়ে যথেষ্ট ডাটা এখনও পাওয়া যায়নি। এবং প্রজননক্ষমতা সম্পর্কেও তেমন তথ্য জানা না যাওয়ায় এই বিষয়ে সতর্কতা দিয়ে রাখা হয়েছে৷
গত ৩ ডিসেম্বর – The Joint Committee on Vaccination and Immunisation (JCVI) জানায় ” গর্ভবতী মায়েরদের এই ভ্যাকসিন গ্রহনের স্বাস্থ্যঝুঁকির ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ সীমিত তথ্যগত কারনে কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে গর্ভবতী মায়েদের এই টিকা নিতে পরামর্শ দেয়া হবেনা৷
ইউকের Healthcare Products Regulatory Agency (MHRA) আগেই রয়টার্সকে বলেছিলেন – তারা পূর্বানুমানের ভিত্তিতে আলাদা এই বিষয় সতর্কবানী জানাবেনা। যা কিছু জানানো হবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়েলের উপরে ভিত্তি করেই হবে।
ভ্যাক্সিন নিয়ে ভ্যাকসিন-বিরোধীদের আরেকটি প্রচারণা আরেকটি দাবি ছিল যে এটিতে মৃত ফিটাস ব্যবহার করা হয়। এই প্রচারণা ফাইজার, মডার্না এবং এস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে আবার শুরু হয়েছে।
তবে ফাইজার কিংবা মডার্না কোনো প্রতিষ্ঠানই ফিটাসের কোষ ব্যবহার করে ভ্যাকসিন তৈরি করেনা। মূলত ১৯৭৩ সালে এস্ট্রেজেনেকার একটি ভ্যাকসিনে ফিটাসের কোষ ব্যবহার করা হয়েছিল যার নাম ছিল HEK 293। তবে সেগুলো ফিটাসের আসল কোষ নয়, ক্লোন কোষ ব্যবহার করে তখন কাজ করা হত। ফলে এসব ভ্যাকসিনে কোন ফিটাসের কোষ ব্যবহার করা হয়না।
সিদ্ধান্ত
প্রচারণাটি অসত্য।
সরকারি দলিলটির কোথাও দেখানো হয়নি যে, এই ভ্যাকসিনের দ্বারা জনসংখ্যা রোধ করা হবে৷ বরং এখানে বলা হয়েছে এই ভ্যাকসিন গর্ভবতী বা কিংবা সন্তান জন্মদান ক্ষমতার উপরে কি প্রভাব ফেলে তা জানা যায়নি৷ Medicines and Healthcare products Regulatory Agency এখন পর্যন্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়েলে রিপোর্টের উপরে নির্ভর করে এরকম কোনো সতর্কতা জারি করেনি ।
রয়টার্স ও ফার্স্ট ড্রাফট অবলম্বনে