ফিচারড নিউজ

অসত্য

ফিচারড নিউজ

September 24, 2021, 4:22 am

Updated: September 24, 2021, 4:22 am

“বাংলাদেশের ৩৩ বিশ্ববিদ্যালয় কানাডায় নিষিদ্ধ” শিরোনামটি বিভ্রান্তিকর

Author: BD FactCheck Published: September 24, 2021, 4:22 am | Updated: September 24, 2021, 4:22 am

বাংলাদেশের বিভন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, “বাংলাদেশের ৩৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির যোগ্য নয়।” বিডি ফ্যাক্টচেক-এর অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, এই দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

যেভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে:
বিডি মর্নিং শিরোনাম করেছে, বাংলাদেশের ৩৩ বিশ্ববিদ্যালয় কানাডায় নিষিদ্ধ। এই সংবাদের ভিতরে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের দেশ কানাডা। শিক্ষার মান, সুযোগ-সুবিধাসহ নানা কারণে প্রতি বছর শত শত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দেশটিতে পাড়ি জমান। সেই কানাডা বলছে, বাংলাদেশের ৩৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির যোগ্য নয়। কারণ, সেখানকার শিক্ষার মানদণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের অনেক ঘাটতি রয়েছে। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (বিসিআইটি) ওয়েবসাইটে গত শুক্রবার এই তথ্য জানানো হয়।”

সময়নিউজের শিরোনাম, “কানাডায় আবেদনের যোগ্যতা হারিয়েছে দেশের ৩৩ বিশ্ববিদ্যালয়।”

কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি বাংলাদেশের ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বা ট্রান্সক্রিপ্টকে মূল্যায়ন করে না। সেগুলো হচ্ছে: দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটি, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়, কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়, আইবিএআইএস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, পুন্ড্রু ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়, লিডিং ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, সিটি ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, সেন্ট্রাল ওমেন্স ইউনিভার্সিটি এবং গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

ফ্যাক্টচেক:
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের খবরে যেমনটি বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের ৩৩ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কানাডায় নিষিদ্ধ বা কানাডায় আবেদনের যোগ্যতা হারিয়েছে দেশের ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয়। ব্যাপারটি আসলে এমন নয়। কানাডার অনেকগুলো বিশ্বিবদ্যালয়ের একটি ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (বিসিআইটি)। এটি কানাডার নামকরা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ও নয়। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বাংলাদেশীদের অর্জিত ডিগ্রির এডুকেশন ক্রেডেনশিয়াল এসেসমেন্ট (ইসিএ) বা “ডিগ্রির মূল্যায়ন” করতে হয়। এই মূল্যায়ন করার জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলার মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডেনশিয়াল ইভালুয়েশন সার্ভিস (আইসিইএস) একটি যা শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক মূল্যায়ন সার্ভিস। বিসিআইটি খুবই ছোট পরিসরের ডিপ্লোমা কোর্সভিত্তিক কলেজ লেভেলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের ইসিএ ব্যাপ্তি স্বাভাবিকভাবেই সীমিত হয়ে থাকে। তারমানে এই না যে বাংলাদেশের এই ৩৩ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কানাডার অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন না।

ডিগ্রি বা সনদের একাডেমিক মূল্যায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলো হচ্ছে, ওয়ার্ল্ড এডুকেশন সার্ভিসেস (ডব্লিউইএস), এডুকেশনাল ক্রেডেনশিয়াল ইভাল্যুয়েশন্স (ইসিই) অন্যতম। এই প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি বা সনদের একাডেমিক মূল্যায়ন করে থাকে।

এছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে ও গ্রেডিং পদ্ধতিতে ট্রান্সক্রিপ্ট দিয়ে থাকে শিক্ষার্থীদের। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোনো ধরণের মূল্যায়নেরও প্রয়োজন পড়ে না। অর্থা] মূল্যায়ন ছাড়ায় শুধু অফিসিয়াল ট্রান্সক্রিপ্ট দিয়ে কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে।

সিদ্ধান্ত:
বাংলাদেশের ৩৩ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে ভর্তি হতে পারবে না। কারণ ওই বিশ্ববিদ্যালয়টি এসব বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের মূল্যায়ন করে না। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে কোনো বাধা নাই।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *