ব্লগ

ব্লগ

July 3, 2020, 6:12 am

Updated: July 3, 2020, 11:04 am

বাংলাদেশে কভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি: বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

Author: BD FactCheck Published: July 3, 2020, 6:12 am | Updated: July 3, 2020, 11:04 am

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড নামক একটি সংস্থা দাবি করেছে, তারা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস সম্পর্কিত রোগের টিকা (ভ্যাকসিন) আবিষ্কার করেছে। ইতিমধ্যে পশুর শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগে তারা সফলতা পেয়েছে। ৩ টি খরগোশের উপরে এই ভ্যাক্সিন প্রয়োগের পর পরীক্ষা করে দেখা গেছে, খরগোশের শরীরে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এরপরে তারা ইদুর, এবং পরে মানুষের উপরেও ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করবেন ।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ড. আসিফ মাহমুদ (মলিকুলার ইঞ্জিনিয়ার) বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যাব। এরপর আমরা তাদের দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

[ নিউজ লিংক- shorturl.at/eBG48shorturl.at/mG256shorturl.at/lqtCU]

বৃহস্পতিবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে এক প্রেস কনফারেন্সে ড. আসিফ মাহমুদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, “উই ডোন্ট ওয়ান্ট টু লুজ এনি মোর পিপল । তাই আমরা এই ভ্যাক্সিন বানানোর উদ্যোগ নিয়েছি।”

প্রেস কনফারেন্স এর ভিডিও লিংক- https://bit.ly/3eRqtew

গ্লোব গ্রুপের পরিচালক এবং জাতীয় সংসদের নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কীরন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনার এই ভ্যাকসিন আমরা মুজিব জন্মশত বার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করার ঘোষণা দিয়েছি। [shorturl.at/qBX19]

ভ্যাকসিন তৈরির ঘোষণা: বৈশ্বিক চর্চা কীরকম?

বিশ্বের বহু দেশেই আলাদা আলাদাভাবে বিজ্ঞানী-গবেষকরা কভিড-এর ভ্যাক্সিন তৈরির চেষ্টা করছে। প্রথম আলোর ৩০শে জুনের এই রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে, কমপক্ষে ১৪৩ টা দল বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় আলাদাভাবে ভ্যাক্সিন তৈরিরি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। [https://bit.ly/2YQT6Tm]

এই ধরনের কোনো একটা ভ্যাক্সিনের গবেষনায় সফলতা এলে সেই পরীক্ষার রেজাল্ট বৈজ্ঞানিক গবেষনাপত্রে প্রকাশিত হয়। সায়েন্টিফিক জার্নালে প্রকাশিত সেই পেপার নিয়ে বিশ্বের সব মহলের বিজ্ঞানীরা তখন বিশ্লেষন করেন। যে কেউই ওয়েবসাইট থেকে থিসিস পেপারটা পড়ে ভ্যাক্সিন সম্পর্কে জানতে পারে। এটা কিভাবে তৈরি, কি কি এলিমেন্ট থাকে, কাজ করে কিভাবে, মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কিনা, কাদের উপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে, রেজাল্ট কি আসল, কত পার্সেন্ট সাফল্য, সাইড ইফেক্ট কি কি দেখা গেল ইত্যাদি সব ইনফরমেশনই আপনি পাবেন।

যেমন- চায়নার প্রফেসর ফেই যে ঝু এবং তার দলের ভ্যাক্সিনের রিসার্চ পেপার পাবেন এখানে –https://bit.ly/3f55kxe

সাউথ আফ্রিকার গবেষক দলের বানানো ভ্যাক্সিন (নাম – PittCoVacc) এর রিসার্চ পেপারটা পাবেন এই লিংক থেকে-https://bit.ly/31CA58V

২রা জুলাই, প্রথম আলোতে আমেরিকান pfizer কোম্পানির বানানো ভ্যাক্সিনের নিউজ ছাপা হয়েছে । নিউজে বলা হয়েছে–”ফাইজারের তৈরি ভ্যাকসিনের প্রথম ক্লিনিক্যাল তথ্য ‘মেডআরএক্সআইভি’ সাময়িকীতে গতকাল প্রকাশ করা হয়। ” [https://bit.ly/2NOiG55]

তারমানে হলো করোনাভাইরাস সম্পর্কিত রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের তথ্য কোনো পিয়ার রিভিউড জার্নালে প্রকাশিত হতে হবে। অথচ গ্লোব বায়োটেক এর গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ কোনো ধরণের প্রকাশনা ছাড়া দাবি করছে তারা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে।

সময় টিভির খবরে তাই বলা হয়েছে, ”আন্তর্জাতিক নীতিমালাতেও কোন ভ্যাক্সিন কিংবা ড্রাগ আবিস্কারের পর তার পূর্ণাঙ্গ ডাটা, ট্রায়াল, এবং পিয়ার রিভিউড জার্নালে তা প্রকাশের পর দাবি করে থাকে যে তারা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে। যা এখনো বাংলাদেশে অনুপস্থিত” [https://bit.ly/2YUXaSO]

গ্লোব বায়োটেক- এর ওয়েবসাইট কী বলছে?

ভ্যাক্সিন সম্পর্কে আরো তথ্যের জন্য গ্লোব বায়োটেক এর ওয়েবসাইটে খুঁজলাম। দুইটা সাইট পাওয়া গেলো। প্রথম সাইটটাতে ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের কোনো তথ্য নাই। শুধু কোনায় লেখা আছে, ২০২০ সালে তারা NOVEL DRUG DISCOVERY করেছে {https://www.globe.com.bd/biotech/]

দ্বিতীয় সাইট [ http://www.globe-biotech.com/] থেকে দেখা গেল, ২০১৭ সাল থেকে গ্লোব বায়োটেক কাজ করতেছে। ২০২০ সালে তারা কভিড শনাক্তকরন কিটও আবিষ্কার করেছে। তবে গনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মতই তারাও জনসাধারণের জন্য কিট তৈরির অনুমোদন পায়নি।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

ইংল্যান্ডে কর্মরত ইমিউনোলজিস্ট ড. মসিহ উল আলম চ্যানেল২৪ এ একটি টকশোতে মতামত দিয়েছেন । সেখানে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, গ্লোবের খরগোশের ল্যাবরেটরিতে খরগোশগুলা বাইরের জীবানু/এন্টিবডি থেকে কতটা বিচ্ছিন্ন ছিল ।

https://www.facebook.com/watch/live/?v=327277638282719&ref=watch_permalink

২। Australian Institute for Bioengineering & Nanotechnology এর ফেলো আবু আলি ইবনে সিনা এই নিউজ সম্পর্কে পজিটিভ একটি পোস্ট দিয়েছেন। বলেছেন, “আমার কাছে খুবই প্রমিজিং মনে হয়েছে| ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সফল হলে বিশ্বে আমাদের অবস্থান অন্য উচ্চতায় চলে যাবে| আমরা যে আর বটমলেস বাস্কেট নেই, আমাদের দেশেও যে এমন মানুষ আছে যারা বিজ্ঞানে তার অবদান রাখতে পারে এটা তার একটি উদাহরণ ।

বাংলাদেশের একটি কোম্পানি গ্লোব বায়োটেক করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করেছে, এর চেয়ে আনন্দের খবর আর কি হতে পারে? এত…

Posted by Abu Ali Ibn Sina on Thursday, July 2, 2020

৩. স্টেম সেল গবেষক ফাহাম আব্দুস সালাম গ্লোব এর প্রজেক্ট এর সমালোচনা করে একটি ফেসবুক পোস্ট লিখেছেন।

তিনি বলেছেন, ”গ্লোব বায়োটেকের এবসোলিউটলি কোনো ধারণাই নেই ক্লিনিকাল ট্রায়াল কীভাবে কখন কোথায় করবে। তারা এখনো টক্সিসিটি (বা সেফটি) এনসিউওর করতে পারে নাই। একান্তই আমার ব্যক্তিগত ধারণা – তারা এখনো ডেলিভারি সিস্টেমে কোন ন্যানো-পারটিকেল কী হবে এটাও ফাইনালাইজ করতে পারে নাই। আমি যা বুঝলাম তাদের কাছে খুবই প্রিলিমিনারী কিছু ডেটা আছে – এবং এই ডেটা নিয়েই তারা উত্তেজিত হয়ে গেছে। আমরা যদি তাদের কথা ফেইস ভ্যালুতে ধরেও নেই যে সত্য – এবং তাদের ভ্যাকসিন এফেকটিভ (খুবই বড় বড় দুটো ‘ইফ’) – তাহলেও এই ভ্যাক্সিনে মিনিমাম দেড়-দুই বছরের কাজ বাকী আছে। পৃথিবীতে যদি কোনো কার্যকর ভ্যাকসিন পাওয়া যায় (আশাবাদী হওয়ার কারণ আছে) – সেটা আগামী এক বছরের মধ্যেই আসবে। বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের ভ্যাকসিন যতোই ভালো হোক সেটা কোনোভাবেই এতো তাড়াতাড়ি আসবে না। সিরিয়াসলি – এটা নিয়ে এতো উত্তেজিত হওয়ার কিছু নাই।”

ttps://www.facebook.com/faham.abdus/posts/10163941803050578

৪. ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়োলজির প্রফেসর এবং ইনসেপ্টা ভ্যাক্সিন এর সাবেক গবেষক মুহাম্মদ সারোয়ার হোসেন বলেছেন, “যে কাজ হয়েছে তা অতি প্রাথমিক পর্যায়ের যা সচারাচর যে কোন ল্যাবে রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে করা হয়। কিন্তু এর উপর ভিত্তি করে যে দাবী করা হয়েছে তা কল্পনাপ্রসূত। ভেক্সিন ডেভেলোপমেন্ট করার স্কিল বাংলাদেশে কারোর নেই। ফুলস্টপ।”
https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=1638163883026621&id=100004990757830


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *