মিডিয়া লিটারেসি

মিডিয়া লিটারেসি

December 11, 2020, 11:26 pm

Updated: December 12, 2020, 12:50 am

যেভাবে ভ্যাকসিন সম্পর্কিত ভুয়া তথ্য মূলধারায় ছড়ায়

Author: BD FactCheck Published: December 11, 2020, 11:26 pm | Updated: December 12, 2020, 12:50 am

কোলিনা কোলটাই করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রথমে জানতে পারেন গত জানুয়ারীতে, সেটাও টিভি বা পত্রিকা মারফত নয়, বরং ফেসবুকে ভ্যাকসিন বিরোধী গ্রুপ থেকে। 

তিনি বলেন, ”তারা চীনের ঘটনা গুলো শেয়ার করে বলছিলো, ‘এই দেখো রহস্যময় রোগটি কিভাবে ছড়ানো হচ্ছে’।”

তিনি জানান, সেসময় ভাইরাসটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যখন গুটিকয়েক মানুষ কথা বলছিলো তখন ভ্যাকসিন বিরোধীরা ঠিকই সক্রিয় ছিল কারণ তারা এটা ভেবে উদ্বিগ্ন ছিল যে নতুন ভাইরাস আসা মানেই নতুন ভ্যাকসিন আসবে এবং সেটা নিতে সবাইকে বাধ্য করা হবে।

কোলটাই নিজে অবশ্য এধরণের ভ্যাকসিন বিরোধী ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ব্যাপারে অবগত। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর এন ইনফর্মড পাবলিক’ এর এই গবেষক জানান, তিনি ফেসবুকে এই ধরণের ভ্যাকসিন বিরোধী প্রচারণার খবর ২০১৫ থেকেই রাখেন। 

এতদিন এই ভ্যাকসিন বিরোধীরা স্বাস্থ্য বিষয়ক অন্যান্য প্রচারণার গ্রুপেই সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু কোভিড মহামারী আসার পর তাদের প্রচারণা দু:খজনকভাবে মূলধারায় জায়গা করে নিতে শুরু করেছে।  

তিনি বলেন, ”করোনাভাইরাস এতটাই অপরিচিত ও অনিশ্চিত যে এর ফলে যেকোন ভুয়া তথ্যে আমরা সহজেই বিশ্বাস করে ফেলছি।”

অসত্য তথ্য বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, এমনকি প্রতিবেশি থেকে শুরু করে পোষা প্রাণীর মালিকদের গ্রুপেও তা বর্তমান, কারণ কোভিড-১৯ নিয়ে মানুষের জিজ্ঞাসার শেষ নেই। তাছাড়া ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থক কিউআননগ্রুপের সদস্য, লকডাউন বিরোধী এবং মাস্ক বিরোধীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভূয়া তথ্য বহুগুণে ছড়িয়েছে।    

মিডিয়া বিশ্লেষক কোম্পানী জিগন্যাল ল্যাবস এর মতে, ‘করোনাভাইরাস পূর্ব পরিকল্পিত’ অথবা ‘মানুষকে নিয়ন্ত্রণ ও ট্র্যাক করার জ্ন্য ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হবে’ এগুলো হলো এ বছর সবচেয়ে বেশী ছড়ানো ভুয়া তথ্যের মধ্যে প্রধান কয়েকটি। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভ্যাকসিন বিরোধী প্রচারণা খুবই সমস্যার বিষয় কারণ এর মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যে জন্য হুমকি হতে পারে। 

সংক্রামক রোগের বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনী ফাউসি গত সপ্তাহে বলেন, মহামারী দূর করে অর্থনীতি পুনরায় গতিশীল করতে ও মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে শতকরা ৭৫ থেকে ৮৫ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। 

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্যালাপ এর এক জরিপে দেখা গেছে শতকরা ৩৭ ভাগ আমেরিকান ভ্যাকসিন নিতে ইচ্ছুক নন। 

অনলাইনে ভুয়া তথ্য নিয়ে কাজ করা সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেইট এর সিইও ইমরান আহমেদ বলেন, মহামারীর প্রকৃত অবস্থার চেয়ে যারা ভ্যাকসিন বিরোধী অপপ্রচার চালায় তারা যথেষ্ট শক্তিশালী। 

তিনি জানান, গত জানুয়ারী থেকে সামাজিক মাধ্যমে ভ্যাকসিন বিরোধী প্রচারণা চালানো ১৫০ টি অ্যাকাউন্টকে ৮ মিলিয়ন মানুষ ফলো করেছেন।   

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো এই সমস্যা সম্পর্কে অবশ্য অবগত আছে। ফেসবুক, ইউটিউব এবং টিকটক বলছে তারা ভ্যাকসিন বিরোধী এসব অসত্য প্রমাণিত তথ্য সরিয়ে নিচ্ছে। আর টুইটার জানিয়েছে তারা এ সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরী করছে। 

সম্প্রতি ফেসবুক বৃহৎ কয়েকটি ভ্যাকসিন বিরোধী গ্রুপ ও পেজ ডাউন করে দিয়েছে। 

ইমরান  আহমেদ জানান, এসব পদক্ষেপের পরও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য মানুষকে ভ্যাকসিন নিতে উদ্বুদ্ধ করাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়ৈছে কারণ বিরোধীরা খুব সহজেই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে দিচ্ছে। 

তার মতে, ”ভ্যাকসিন বিরোধীদের কাজ মানুষকে ভ্যাকসিন নিতে উদ্বুদ্ধ করা নয়, বরং তাদের কাজ হলো সন্দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া যেটি খুবই সহজ তাদের জন্য।”   

npr.org অবলম্বনে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *