পরিবেশ চেক

সত্য

পরিবেশ চেক

February 6, 2020, 2:32 pm

Updated: April 20, 2020, 5:39 pm

শেখ হাসিনা কি নোবেল শান্তির সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন?

Author: BDFactCheck Admin Published: February 6, 2020, 2:32 pm | Updated: April 20, 2020, 5:39 pm

কদরুদ্দীন শিশির: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নোবেল শান্তির সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন বলে যে সংবাদ মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে বিডি ফ্যাক্টচেকের অনুসন্ধানে তার সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

বাংলাদেশের বেশ কিছু মূলধারার সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নোবেল শান্তি পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন। এসব সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে শান্তির এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। এজন্য ২০১৭ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ১০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় তিনি স্থান পেয়েছেন। দ্য এশিয়ান এজ’এ বলা হয়েছে, “Bangladesh Prime Minister Sheikh Hasina has got her space on a shortlist of 10 personalities nominated for potential winner of Nobel Peace Prize-2017.”

সংবাদ মাধ্যমগুলোতে একইরকম প্রতিবেদন সরাসরি কপি করা হয়েছে। এসব সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ”চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখের মধ্যে ৩১৮ টি নামের প্রস্তাব আসে নোবেল কমিটির কাছে। এবার নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০১৭ এর জন্য মনোনীতদের মধ্যে রয়েছেন ২১৫ জন ব্যক্তি এবং ১০৩ প্রতিষ্ঠান। পরে, গত মার্চে এই তালিকা থেকে যাচাই–বাছাই করা হয়। যাচাই–বাছাই শেষে তা প্রেরণ করা হয় উপদেষ্টা মূল্যায়নের জন্য। জুলাই মাসে উপদেষ্টা মূল্যায়ন চূড়ান্ত হয়। উপদেষ্টা মূল্যায়নের ভিত্তিতে সংক্ষিপ্ত একটি তালিকা উপস্থাপিত হয় মূল কমিটির কাছে। আর এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। কমিটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান করেন।”

সংবাদের উৎস:
বিডি ফ্যাক্ট চেকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা ইনসাইডার নামক একটি অনলাইন সংবাদ পোর্টাল সর্বপ্রথম এ সম্পর্কিত সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদ পোর্টালটি কোনো ধরণের সংবাদ উৎস ছাড়াই সংবাদটি প্রকাশ করে। তারা সংবাদ সূত্র হিসেবে শুধু বলেছে, “বিভিন্ন সূত্রে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকা বেরিয়ে আসে।” কিন্তু “বিভিন্ন সূত্র” কী কী তা সংবাদ মাধ্যমটি পরিষ্কার করে বলেনি।

সংবাদটি যেভাবে ছড়ায়:

ঢাকা ইনসাইডার’এর এই সংবাদটি Saima Wazed Putul নামের একটি ফেজবুক ফ্যান পেজ শেয়ার করা হয়।

আর এটিকে সংবাদসূত্র হিসেবে ধরে সংবাদ প্রকাশ করেছে আরটিভি অনলাইন। অথচ এই ফেসবুক পেজটি প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ভেরিফাইড পেজ না। আরটিভি অনলাইন কোনো ধরণের যাচাই বাছাই ছাড়াই শুধু একটি ফ্যান পেজের উপর ভিত্তি করে সংবাদটি তাদের পোর্টালে আপ করেছে।

বাংলাদেশের আরও কয়েকটি মূলধারার সংবাদমাধ্যম সংবাদটি হুবহু কপি করে প্রকাশ করে। এরমধ্যে কালের কণ্ঠ, দৈনিক পূর্বকোণ, ইংরেজি দৈনিক দ্য এশিয়ান এজ অন্যতম। আর এরপরই সংবাদটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। অথচ এমন সংবাদ আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদ মাধ্যমে আসেনি।

নোবেল কমিটির বক্তব্য:
নোবেল পুরস্কার প্রদানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট তাদের সাইটে স্পষ্ট উল্লেখ করেছে, তারা নোবেল পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থানপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করে না পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত। এমনকি যারা এই তালিকায় স্থান পায় তাদেরকেও জানানো হয় না। শুধু নোবেল পুরস্কার যিনি পান তাকে জানানো হয়।

আর এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি কখনও। আর এইবার যদি ব্যতিক্রম হতো সেটি নিসন্দেহে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের নজরে আসতো।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *