
সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার বাড়ার সাথে কোভিড নিয়ে ভুয়া তথ্যে বিশ্বাসও বাড়ছে
Author: BD FactCheck Published: December 20, 2020, 6:40 pm | Updated: December 20, 2020, 6:42 pm
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যা-ই পড়বেন সব বিশ্বাস করা যাবেনা। তবে যারা সংবাদের জন্য নিয়মিত সামাজিক মাধ্যমের ওপর নির্ভর করে থাকেন তাদের চিন্তাভাবনা ভিন্নরকম।
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, একজন মানুষ সংবাদের উৎস হিসেবে সামাজিক মাধ্যমের উপর যত বেশি নির্ভরশীল হবেন, কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ে ছড়ানো ভুয়া তথ্যে তার বিশ্বাস করার সম্ভাবনা তত বেশি হবে। করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের মাত্রা এ সংক্রান্ত ভুয়া তথ্যে মানুষের বিশ্বাসের প্রবণতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে, যারা ভিন্ন মতাবলম্বীদের সাথে কথা বলতে আগ্রহী এবং বিজ্ঞানীদের উপর আস্থা রাখেন তাদের ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্যে বিশ্বাসের প্রবণতা কিছুটা কমেছে বলে গবেষণাটিতে দেখা গেছে।
গবেষণাটির একজন গবেষক হলেন ওয়াশিটন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মারো কলেজ অব কমিউনিকেশনের ইয়ান সু। তিনি বলেন, ”আপনি যত বেশী সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবেন ততই কোভিড-১৯ নিয়ে উদ্বিগ্ন হবেন কারণ সামাজিক মাধ্যমে অনেক অপ্রমাণিত দাবি ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানো হয়। এরপর এখানে থেকে উদ্বেগ আরো বেড়ে যায় যা ভুয়া তথ্যে বিশ্বাসের সম্ভাবনা আরো বাড়িয়ে দে।”
ইয়ান সু মহামারির শুরুর দিকে চালানো ‘আমেরিকান ন্যাশনাল ইলেকশন স্টাডিজ এক্সপ্লোরেটরী টেস্টিং’ শীর্ষক জরিপে অংশ নেয়া ৩০৮০ জনের উত্তর বিশ্লেষণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪৮০ জনেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাস ইচ্ছাকৃতভাবে ল্যাবে তৈরি কিংবা এর ভ্যাকসিন আছে এরকম দুয়েকটি কোভিড-১৯ সক্রান্ত ভুয়া তথ্যে বিশ্বাস করেছেন বলে তারা জানান।
একই সময়ে আমেরিকার পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে দেখা যায়, প্রতি ১০ জন আমেরিকানের মধ্যে ৩ জন বিশ্বাস করেন যে করোনাভাইরাস আসলে ল্যাবে তৈরি, যদিও এই দাবির কোন ভিত্তি কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। তিন ভাগের এক ভাগ বিশ্বাস করেন ভাইরাসটির ভ্যাকসিন তৈরিই আছে।
সু বলেন, ভুয়া তথ্যের ছড়ানো রোধে সমাধানের কথাও গবেষণায় উল্লেখ করা আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, ”ভূয়া তথ্য নিয়ন্ত্রণে সামাজিক মাধ্যমে ফ্যাক্ট চেকাররা গুরুত্বপূর্ণ। যখন সেখানে কোন ফ্যাক্ট চেকার নেই তখন মানুষ তার পূর্ব থেকে ধারণ করা বিশ্বাসের সাথে মিলে এমন সব তথ্যই শুধু বিশ্বাস করবে। একইসাথে সাধারণ মানুষের উচিত ভিন্ন মতাবলম্বী এবং ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের মানুষের সাথে কথা বলার মাধ্যমে নিজস্ব কমফোর্ট জোন এবং সমমনা চিন্তার জগতের বাইরে বেরিয়ে আসা। মানুষ যখন ভিন্ন মতামতের সংস্পর্শে আসে তখন তার নিজের চিন্তাভাবনা নিয়ে নুতন করে ভাবে এবং অনেক ক্ষেত্রে ভুল ত্রুটি শুধরে নেয়।”
সু বলেন, করোনা মহামারি নিয়ে ক্রমবর্ধমান ভুয়া তথ্যের ছড়াছড়ি থেকে বুঝতে হবে যে এটা নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
ইয়ান সু জানান, ”কোভিড-১৯ মহামারির সময় সামাজিক মাধ্যমে অনেক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়েছে যার প্রভাব ছিল ক্ষতিকারক কারণ অনেকে তার পূর্ব থেকে ধারণ করা চিন্তার স্বপক্ষে এগুলোকে যুক্তি হিসেবে দাঁড় করান এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের আক্রমণ করেন। ভুয়া তথ্য ছড়ানো ও বিশ্বাস মোকাবেলায় এর ইতিহাস ও কারণ জানা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
সূত্র: মেডিসিন নেট