
হার্ড ইমিউনিটির আহ্বান জানানো চিঠিতে ভুয়া বিশেষজ্ঞদের নাম
Author: BD FactCheck Published: October 10, 2020, 7:18 pm | Updated: October 28, 2020, 1:35 pm
সম্প্রতি করোনা মহামারি সংকটে ‘হার্ড ইমিউনিটি অবলম্বনের’ আহবান করে দেয়া এক ‘বিবৃতি’ নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু উক্ত বিবৃতিতে একাধিক ভুয়া নাম থাকার অভিযোগ উঠেছে।
‘দ্য গ্রেট ব্যারিংটন ডিক্লারেশন’ নামে উক্ত বিবৃতিতে সারা দুনিয়া থেকে ১৫ হাজারের অধিক বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়েছে দাবি করা হয়। কিন্তু স্কাই নিউজের এক অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত স্বাক্ষরকৃতদের তালিকায় একাধিক ভুয়া নামের অস্তিত্ব আছে। এছাড়াও উক্ত তালিকায় হোমিওপ্যাথি চর্চাকারী, হিপনোথেরাপিস্টদের নামও যুক্ত আছে। প্রায় ১৮ জন হোমিওপ্যাথি বিশেষজ্ঞ এর সাথে ১০০ জন পাওয়া গেছে বিভিন্ন থেরাপিস্টদের।
নামের মধ্যে ডাঃ জনি ব্যানানা, প্রফেসর কমিনিক ডামিংস সহ একাধিক ভুয়া নাম পাওয়া গেছে। আরেকজন তার ঠিকানায় লেখেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ ইউর মাম’।
গত সপ্তাহে উক্ত বিবৃতিতে লকডাউন উঠিয়ে দেয়া, বয়স্কদের প্রতি আলাদা খেয়াল রাখার পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার আহবান বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
যদিও উক্ত ঘোষণাপত্রে অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ, স্ট্যানফোর্ড, নটিংহ্যাম, সাসেক্স এর একাধিক বিশেষজ্ঞের নাম থাকলেও তাদের ওয়েবসাইটে যেকেউ স্বাক্ষরকারী হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করতে পারে। কেবল নামের সাথে যুক্ত করতে হবে ইমেইল, ঠিকানা। তবে আরো যুক্ত করতে হয় স্বাক্ষরকারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক নাকি একজন সাধারণ জনতা। তাদের দাবিমতে, এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৬০ হাজার ব্যক্তি এখানে স্বাক্ষর করেছে।
যদিও বুঝা যাচ্ছেনা উক্ত ঘোষণাপত্রের কতজন আসলেই গবেষক বা চিকিৎসক, তবে এ বিষয়ের একাধিক বিশেষজ্ঞ এ রূপ ঘোষণার সমালোচনা করেছেন।
সাউদ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র গবেষক ডঃ মাইকেল হেড বলেন, এ ধরনের আহবান খুবই খারাপ । তিনি সন্দেহ করেন করোনা ছড়িয়ে পড়লে করোনায় অধিক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন এমন ব্যক্তিরা রক্ষা পাবেন কীনা।
“যে নীতির আলোকে তারা এই আহবান জানিয়েছে তা জাতীয় ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যে হুমকি”, দাবি করেন ডঃ হেড।
এছাড়াও কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জেরেমি রোজম্যান জানান, গবেষণায় এসেছে করোনা থেকে সুরক্ষাকারী এন্টিবডি একসময় “ফুরিয়ে যেতে” শুরু করে এবং দ্বিতীয়বার আক্রমণ হবার সুযোগ থাকে।
ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এর স্যার সিমন স্টিভেন্স জানান, করোনার ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ এ ৬৫ এর বেশি বয়স্কদের সুরক্ষা দিতে হবে। কেননা করোনার দ্বিতীয় আগমন ‘বয়সকেন্দ্রিক বিপর্যয়’ তৈরি করতে পারে।
এছাড়াও উক্ত ঘোষণা ‘লং কভিড’ ইস্যুটি আমলে নেয় নি। অথচ জানা যাচ্ছে, তরুনসহ স্বাস্থ্যবান অনেকের সামান্য ইনফেকশন হলেও করোনার একাধিক লক্ষণ মাসের পর মাস থাকতে পারে।
প্রতিবেদনটি গার্ডিয়ান থেকে অনূদিত